ইসলামে মানুষের মূল্যায়ন বাহ্যিক সৌন্দর্য বা সম্পদের উপর নির্ভর করে না। আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:
আল্লাহ তোমাদের চেহারা ও সম্পদের প্রতি নয়, বরং তোমাদের হৃদয় ও কর্মের প্রতি মনোযোগ দেন।
এই উক্তি আল্লাহর ন্যায়বিচার ও দয়ার গভীরতাকে প্রকাশ করে। এটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, প্রকৃত মর্যাদা অন্তরের পবিত্রতা এবং সৎ কর্মের মধ্যেই নিহিত।
মানুষ সাধারণত বাহ্যিক সৌন্দর্য, ধন-সম্পদ, এবং সামাজিক মর্যাদাকে কেন্দ্র করে অন্যদের বিচার করে। কিন্তু এগুলো সময়ের সাথে পরিবর্তনশীল। চেহারার সৌন্দর্য ম্লান হয়ে যায়, আর সম্পদ বিলীন হতে পারে।
একটি উদাহরণ দেই—ফিরআউন ছিল পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী শাসকদের একজন। কিন্তু তার হৃদয় ছিল অহংকার ও পাপ পূর্ণ। ফলাফল? তার ধন-সম্পদ ও রাজত্ব তাকে আল্লাহর শাস্তি থেকে রক্ষা করতে পারেনি।
হৃদয়ের পবিত্রতার গুরুত্ব
আল্লাহ আমাদের বাহ্যিক রূপ নয়, অন্তরের অবস্থাকে দেখেন। একবার নবীজী (সা.) বলেছেন:
"দেহে একটি অংশ আছে; যদি এটি ঠিক থাকে, তবে পুরো দেহ ঠিক থাকবে। সেটি হলো হৃদয়।" (সহীহ বুখারী)
হৃদয় পবিত্র হলে, মানুষের কাজও পবিত্র হয়। একজন দরিদ্র মুমিনের সৎ কর্ম ও খাঁটি হৃদয় আল্লাহর কাছে ধনীদের চেয়ে অধিক প্রিয়।
সৎ কর্মের মর্যাদা
আমাদের কর্মই আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যম। আল্লাহ বলেন:
যে ব্যক্তি এক কণার পরিমাণ সৎকর্ম করবে, সে তা দেখতে পাবে।
তাই, বাহ্যিক সৌন্দর্য বা সম্পদের চেয়ে হৃদয়ের খাঁটি নিয়ত এবং সৎ কর্মের গুরুত্বই বেশি।
আল্লাহর কাছে মানুষের প্রকৃত মর্যাদা নির্ভর করে তার হৃদয়ের পবিত্রতা এবং কর্মের সৎগুণের উপর। এই শিক্ষা আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, বাহ্যিক সৌন্দর্য বা ধন-সম্পদ নয়, বরং সততা, নৈতিকতা এবং আল্লাহর প্রতি সত্যিকারের আনুগত্যই আমাদের প্রকৃত পরিচয়।
তাই, অন্তরকে পবিত্র করো এবং কর্মকে খাঁটি করো, কারণ আল্লাহ তোমাদের হৃদয় দেখেন, বাহ্যিকতা নয়।

0 Comments